গায়ক-অভিনেতা: শ্রী
অসিতবরণ মুখোপাধ্যায় (১৯১৩-১৯৮৪)
কৃষ্ণচন্দ্র দে, পঙ্কজ মল্লিক, কুন্দনলাল সায়গল, কানন দেবী, পাহাড়ী সান্যাল, রবীন মজুমদার, অসিতবরণ -- সবার এক সাধারণ পরিচিতি: সবাই
ছিলেন গায়ক-অভিনেতা, আমাদের দেশে চলচ্চিত্রের প্রথম দিকে, সবাই
টালীগঞ্জের নিউ থিয়েটার্স-এর সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সেখান থেকেই সুনাম
কুড়িয়েছিলেন। সিনেমার শুরুতে নেপথ্য সংগীতের প্রচলন ছিল না, ওই ধরনের গায়ক শ্রেনী (যেমন রফী, লতা) তখনও মঞ্চে
না আসার জন্য গায়ক-অভিনেতার কদর ছিল। প্রথম নেপথ্য সঙ্গীত ১৯৩৫-এ শ্রী রাইচাঁদ বড়ালের "ভাগ্যচক্র"
ছবিতে শোনা গেলেও, পরের কয়েক বছর সেই গায়ক-অভিনেতাদেরই কদর ছিল।
নিউ থিয়েটার্স-এর সাথে পরে নেপথ্য গায়ক/গায়িকা হিসেবে যুক্ত হন রাধারানী, ইলা ঘোষ, সুপ্রভা সরকার, ধনঞ্জয়
ভট্টাচার্য ও অন্যরা।
শ্রী জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের কাছে তবলা বাজানো শিখে অসিত গ্রামাফোন কোম্পানী ও
আকাশবাণীতে তবলা বাদক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন (এক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে গানের অডিশন
এ সহায়তাও করেছিলেন ব্রডকাস্টিন কর্পোরেশন-এ, মানে বর্তমানের
আকাশবাণী)। কিন্তু সুন্দর কন্ঠের জন্য মাঝে মাঝে জলসাতে গানের সুযোগ পেতেন, দেখতেও ছিলেন সুপুরুষ। এমনই এক জলসায় শ্রী পাহাড়ী সান্যাল অসিতের গান শুনে
তাকে নিউ থিয়েটার্স-এ নিয়ে আসেন। বাংলা ছবি "প্রতিশ্রুতি" (১৯৪১) ও তার
হিন্দী "সৌগন্ধ" ছবিতে সুযোগ পেয়ে গেলেন নায়কের চরিত্রে অভিনয় করার। চল্লিশের দশকের শুরুতে যারা কলকাতা ছেড়ে বম্বে
পাড়ি দেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সায়গল। অসিত খুব
সহজেই সেই শূন্যস্থান পূর্ণ করলেন।তারপর থেকে দর্শক শ্রোতাদের সাধুবাদ পাওয়া অনেক
হিন্দি ও বাংলা ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন (ছায়াছবি অনেক সময় হিন্দী ও বাংলা, দুই ভাষাতেই বানানো হোত) -- "বাপস", "কাশীনাথ", "বাসিয়াতনামা", "জবাব", "সৌগন্ধ", "মনজুর" ইত্যাদি।
অসিতবরন : হিন্দী ছায়াছবিতে গানের তালিকা
|
|||||
Song
|
Singer(s)
|
Composer
|
Lyrics
|
Film
|
Year
|
Dur Desh Ka Rehne Wala Aaya
|
Kanan Devi + Asit Baran
|
Kamal Dasgupta
|
Bekal
|
Jawab
|
1942
|
Ab Aayi Basant Bahaar
|
Asit Baran
|
R C Boral
|
Pandit Natwar
|
Saugandh
|
1942
|
Raajaabeti Kekaraalaa Gunthalu Tu
|
Asit Baran + Indrani Roy
|
R C Boral
|
Pandit Natwar
|
Saugandh
|
1942
|
Rang Gayi Aaj Man Ki Bagiya
|
Asit Baran + Shanti
|
R C Boral
|
Pandit Natwar
|
Saugandh
|
1942
|
Wo Humko Bhule Lekin Hum Kaise Bhul Jaye
|
Asit Baran + Shanti
|
R C Boral
|
Pandit Natwar
|
Saugandh
|
1942
|
Aayi Basant Bahar
|
Asit Baran
|
Damodar Sharma
|
Sarovar Ki Sundari
|
1942
|
|
Hum Chale Watan Ki Aur
|
Asit Baran
|
Pankaj Mullick
|
Pandit Bhushan
|
Kashinath
|
1943
|
Mere Bagiya Me Kooke Koyaliya
|
Asit Baran
|
Pankaj Mullick
|
Pandit Bhushan
|
Kashinath
|
1943
|
Mai Jaan Gaya Pehchan Gaya
|
Asit Baran
|
Pankaj Mullick
|
Pandit Bhushan
|
Kashinath
|
1943
|
Lo Shuru Huyee Iss Bar
|
Asit Baran + Bela Mukherjee
|
Pankaj Mullick
|
Pandit Bhushan
|
Kashinath
|
1943
|
Bhul Na Jaana Aaj Ki Baate
|
Asit Baran + Indrani Roy
|
R C Boral
|
Zaakir Hussain
|
Wapas
|
1943
|
Hum Kochwan Pyare
|
Asit Baran
|
R C Boral
|
Pandit Bhushan
|
Wapas
|
1943
|
Tumne Mujhse Prem Jata Kar
|
Asit Baran
|
R C Boral
|
Zaakir Hussain
|
Wapas
|
1943
|
Jeevan hai bekar bina tumhare
|
Asit Baran + Binota Roy
|
R C Boral
|
Pt Bhushan
|
Wapas
|
1943
|
Manwa phir kahe tadpaye
|
Asit Baran
|
R C Boral
|
Akhtar Chughati
|
Wapas
|
1943
|
Man Phule Nahi Samaye
|
Asit Baran + Bharati Debi
|
R C Boral
|
Zaakir Hussain
|
Wasiatnama
|
1945
|
Duniya Ka Gham Bhul Jaa
|
Asit Baran + Sumitra
|
R C Boral
|
Zaakir Hussain
|
Wasiatnama
|
1945
|
Kahe Mann Bechain Sajni
|
Asit Baran
|
R C Boral
|
Zaakir Hussain
|
Wasiatnama
|
1945
|
Mai Dil Wale Ki Zindagi Hu
|
Kanan Devi + Asit Baran
|
Kamal Dasgupta
|
Faiyyaz Hashmi
|
Arabian Nights
|
1946
|
Rimjhim Rimjihm Barse Pani
|
Ila Ghosh + Asit Baran
|
Pankaj Mullick
|
Pandit Bhushan
|
Manzoor
|
1949
|
Hriday mein phool rahein hain
|
Asit Baran
|
Pankaj Mullick
|
Pandit Bhushan
|
Manzoor
|
1949
|
Gate The Khushi Ke Geet Kabhi
|
Asit Baran
|
K P Sen
|
M Razi Banars
|
Azadi Ke Baad
|
1951
|
Toota Hai Naata Meet Ka
|
Asit Baran
|
Arun Kumar Mukherjee
|
Bharat Vyas
|
Parineeta
|
1953
|
বাংলা হোক বা হিন্দী, বাঘা বাঘা সুরকারদের হয়ে গান করতেন অসিত -- রাইচাঁদ
বড়াল, পঙ্কজ মল্লিক, কমল দাসগুপ্ত, রবীন চট্টোপাধ্যায়, দূর্গা সেন ইত্যাদি।
অভিনয় বা গান, দুটোতেই প্রথম সারিতে ছিলেন অসিত। তার গানের ধরনে পঙ্কজ মল্লিকের প্রভাব সুস্পষ্ট ছিল। একক ছাড়াও দ্বৈত গেয়েছেন কানন দেবী, বেলা মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রানী রায়, শান্তি, ভারতী দেবী ও ইলা ঘোষের সাথে তেমনি আবার মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তখনকার নাম করা নায়িকা শ্যামা ("সুহাগ সিন্দুর"), ভারতী দেবী ("মনজুর"), মীনা কুমারী ("পরিণীতা"), সুচিত্রা সেন ("স্মৃতিটুকু থাক") ইত্যাদির সাথে।
নিউ থিয়েটার্স ছেড়ে অসিত বম্বে যান
১৯৫২ তে, "সুহাগ সিন্দুর"-এ অভিনয় করার জন্য, কিন্তু গান গাওয়ায় কোনো অসুবিধার জন্য অসিতকে নেপথ্য গায়কের সাহায্য নিতে হয়। বিমল রায়ের "পরিণীতা"(১৯৫৩) ছবিতে যেমন
সংবেদনশীল অভিনয় করেছিলেন, তেমনই গেয়েছিলেন
গান। সেই ছিল অসিতের শেষ হিন্দী ছায়াছবি -- কেননা, ততদিনে নেপথ্য শিল্পীরা (রফী-মুকেশ-তালাত
ইত্যাদি) আসরে নেমে পড়েছেন, গায়ক-অভিনেতাদের গানের জায়গা দখল করতে।
পরের বছরগুলিতে ব্যস্ত ছিলেন বাংলা ছায়াছবির অভিনয়ে (শুরুতে নায়ক, পরে পার্শ অভিনেতা হিসেবে), সে তালিকাও সংক্ষিপ্ত না: "প্রত্যাবর্তন" (১৯৫১), “বন্ধু” (১৯৫৮), “নার্স সিসি” (১৯৪৭)”কার পাপে” (১৯৫২), "অর্ধাঙ্গিনী" (১৯৫৫), "তাপসী (১৯৫৭), "নতুন প্রভাত" (১৯৫৭), “স্মৃতিটুকু থাক” (১৯৫৯), "বধূ" (১৯৬২), “এন্টনি ফিরিঙ্গী” (১৯৬৭) , "ছিন্নপত্র" (১৯৭১), ” শ্রী শ্রী
রামকৃষ্ণ কথামৃত” (১৯৮২) ইত্যাদি। "প্রতিশ্রুতি" (১৯৪১) ছায়াছবিতে যেমন
অভিনেতা-গায়ক ছিলেন (রাইচাঁদ বড়াল সুরকার ছিলেন), তেমনি "নিষিদ্ধ ফল"(১৯৫৫) এবং
"জয়দেব"(১৯৫৪) ছায়াছবিতে অভিনয় ও গান, দুটোই করেছিলেন (নচিকেতা ঘোষের
সুরে) ।
শ্রী রামকৃষ্ণের
মাহাত্ব প্রচারের জন্য"রঙ্গরস" নাম এক নাটক গোষ্ঠীর স্থাপনাও অসিত
করেছিলেন, সমবেত কীর্তন গানের আসরও বসাতেন।
অসিতবরণের বাংলা গান
|
|||||
গানের কথা
|
ছায়াছবি
|
শিল্পী
|
কথা
|
সুর
|
সন
|
সবার হাতে
বিলিয়ে দিলাম
|
অসিতবরণ
|
প্রণব রায়
|
কমল দাসগুপ্ত
|
১৯৩৭
|
|
এলো রে এলো রে
|
কাশীনাথ
|
অসিতবরণ +
বেলা
মুখোপাধ্যায়
|
প্রণব রায়
|
পঙ্কজ মল্লিক
|
১৯৪৩
|
ভজ রে ভাইয়া রাম গোবিন্দ
|
নিরুদ্দেশ
|
অসিতবরণ
|
বি.এন.শর্মা
|
রবীন চট্টোপাধ্যায়
|
১৯৪৯
|
মোর শেষের
গানটি রেখে গেলাম
|
ইন্দ্রজাল
|
অসিতবরণ
|
প্রণব রায়
|
গোপেন মল্লিক
|
১৯৫০
|
শুধু মালাটি
দিও না গো
|
সঞ্চালী
|
অসিতবরণ
|
প্রণব রায়
|
দূর্গা সেন
|
১৯৫০
|
আমরা দুজন
স্বর্গ খেলনা
|
রবীন্দ্র
সঙ্গীত
|
১৯৪৮
|
|||
সে কোন বনের
হরিন ছিল আমার মনে
|
দৃষ্টিদান
|
অসিত বরণ +
সুপ্রীতি
ঘোষ
|
রবীন্দ্র
সঙ্গীত
|
১৯৪৮
|
ফুল ছিল ফুলবনে --শিল্পী:অসিতবরণ --কথা:গিরীন চক্রবর্তী- সুর:দূর্গা সেন
আরও পড়ুন:
***** এই লেখা থেকে যদি কেউ তথ্য নিয়ে অন্য কোনো ভাবে
ব্যবহার করেন, আশা করব স্বীকৃতি
প্রদান করবেন।