রিহার্সাল হচ্ছে, "এই রাত দুপুরে
দুষ্টু বাঁশী বাজে", গৌরীপ্রসন্ন
মজুমদারের লেখা, গাইবেন পিন্টু
ভট্টাচার্য। মাঝখানের একটা লাইন নিযে পরিচালক নচিকেতা ঘোষ নাজেহাল হচ্ছেন
--"এবার চুপটিকরে ঘরের কপাট খোল, দাঁড়ের টিয়া
তাকেই শুধু বোলো"। ওই "তাকেই শুধু বোলো"র পুনরাবৃত্তি ভালো
শোনাচ্ছিল না নচিকেতার কানে, গৌরীপ্রসন্ন কে
বললেন কিছু একটা রদবদল করতে। গৌরীপ্রসন্ন লাইনটা বদলে দিয়ে লিখলেন--"এবার
চুপটিকরে ঘরের কপাট খোল, দাঁড়ের টিয়া তাকেই শুধু বোলো, একি আমার হোল"। এই বার অনায়াসে সুর বাঁধলেন নচিকেতা, গান পাকা হোল।
লালচাঁদ বড়ালের বাপারাটা মজার
ছিল। রেকর্ড করতে গিয়ে শুরুতেই গানের কথা গুলিয়ে ফেললেন, নির্ধারিত গানের বদলে ধরে বসলেন অন্য এক গান। কিন্তু উপস্থিত বুদ্ধি ধরে রাখলেন, আগে গিয়ে যাতে আরো না গোলমাল হয় সেই কথা মাথায় রেখে যোগ করে দিলেন একটা নতুন
লাইন "ভুলে গেলে বলে বলে দিও"। সঙ্গীত সহযোগীরা ইশারাটা বুঝে ফেললো, বিনা ছন্দপতনে গানটির রেকর্ডিং শেষ হলো,
গানের সেই ভুল বাণী
নিয়েই, রেকর্ডিং
কোম্পানি'র বিদেশী
কর্মকর্তা ধরতেই পারলেন না লিরিকস্ এর বিভ্রাট।
শ্যামল গুপ্ত'র লেখা গানের প্রাথমিক
রেকর্ড করে আসলেন মৃনাল চক্রবর্তী, সেই জনপ্রিয় গান
"ঠুং ঠাং ঠুং ঠাং চুড়ির তালে থৈ থৈ
বন্যা নাচে রে", নিজেই সুর
দিয়েছিলেন। পরের দিন সেই প্রাথমিক রেকর্ডটা নিজে বাজিয়ে শুনে দেখেন গানের কথায় ভুল করেছেন ওই লাইনে -- "শাওন এলো
মন বলে কে যেন এলো না, মরমী মরমীয়া
গুমরিয়া কান্দে"। শ্যামলের মূল লেখায় “গুমরিয়া
কান্দে"র জায়গায় অন্য কিছু বাণী ছিল, যেখানে মৃনাল ভুল করেছিলেন। বিব্রত হয়ে গেলেন শ্যামল'দার কাছে, শ্যামল কিন্তু শুনে বললেন, "এটা তো দারুন হয়েছে", এটাই থাকবে। গানের আগের লাইনের সাথে মিল না থাকার ব্যাপারটা উপেক্ষা করে বললেন, “ কথার মিলই গানের সবকিছু না,
খুব ভালো গেয়েছিস”।
জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় নিজেই গান লিখতেন, রেকর্ড নিজে তো করতেনই, আবার কখনো কখনো অন্যদের দিয়েও করাতেন, দ্বিতীয়বার। “তোমাকে না নিয়ে যেন আসে না সকাল” গানটি প্রথমে নিজে রেকর্ড করার পর শ্রীমতী
হৈমন্তী শুক্লাকে দিয়ে দ্বিতীয়বার রেকর্ড করান। নিজের গানে ছিল "তুমি ছাড়া কি অকারণে আঁখি মেলে এ মৃনাল", কিন্তু হৈমন্তীর গানে সেটার পরিবর্তন হোল "তুমি ছাড়া কি অকারণে সুখে দোলে
এ মৃনাল" এবং অতিরিক্ত দুই লাইনও সাথে জুড়ল: "আলো নিয়ে
চলে গেছে ও দুটি নয়ন, ফিরে দেখা ভুলে গেছে ও দুটি নয়ন"।
(রেফারেন্সটা খুঁজেই পেলাম না, তাই ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য কেন "গাঁয়ের বধু" গানটা গাইতে রাজি হননি, সেটা উল্লেখ করতে পারলাম না -- "ডাকিনী যোগিনী"র লাইন গুলো পাল্টাতে বলেছিলেন ধনঞ্জয় কিন্তু সলিল বাবু রাজি হন নি -- গান রেকর্ড করলেন পরে হেমন্ত বাবু)।
আরও পড়ুন / শুনুন :
Sri B K Ganguly Mahashoy,
ReplyDeleteCame to know of about this blog through Sri Anjan Ganguly. Reading all the 15 posts was a wonderful experience. Will look forward to many more enlightening posts. Thanks once again for this passionate endeavour.
Thanks for the kind words of encouragement.
Deleteখুব ভালো লাগলো পড়ে ।
ReplyDelete