এক সময় আকাশবাণী,
কলকাতার সুগম সঙ্গীত খুব জনপ্রিয় ছিল। আকাশবাণীর গীতিকার, সুরকারদের রচিত গান আকাশবাণীর
বাদ্দ্যযন্ত্র-কুশলীদের সহযোগীতায়
আমন্ত্রিত শিল্পীরা গাইতেন। ষাটের দশকের কথা বলছি, প্রায়
সব নামী সঙ্গীত শিল্পীরাই সুগম
সংগীতে অংশগ্রহণ করতেন।। আকাশবাণীর
তালিকাভুক্ত গীতিকার হবার জন্য নিয়ম ছিল: আপনার লেখা ২৫টা গান একসাথে জমা দিতে হবে, যদি আকাশবাণীর পছন্দ হয় , তবে আপনি তালিকাভুক্ত হবেন, আপনার লেখা গান কোনো এক শিল্পী কখনো
গেয়ে শোনাবেন কোনো এক
সুগমসংগীতের আসরে।যতদুর জানি, গীতিকারের নির্বাচন করতেন কোনো নামী কবি (যদি
ভুল না করি: প্রেমেন্দ্র মিত্রও একসময়
নির্বাচক ছিলেন, আরও অনেক নামী
কবিদের মত)।
তরুণ গীতিকার
মিলটু ঘোষ সেই ভাবেই ২৫টা কবিতা পাঠিয়েছিলেন সরাসরি আকাশবাণী, কলকাতায়।
অনেক সময় গেল, কোনই উত্তর আসে
না, কোথায় পরে রইলো সেইসব গীত, গেল কোন অ-সংশ্লিষ্ট বিভাগে কে জানে, প্রায় ভুলেই গেছিলেন ব্যাপারটা। মিলটুবাবু
থাকেন বরানগরে আর সেই সময় আকাশবাণী, কলকাতার সঙ্গীত বিভাগের প্রধান, বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী শ্রী জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, থাকতেন দমদমে। দেখা হতে একদিন কথায় কথায়
মিলটুবাবু সেই কথাটা বলেই ফেললেন জ্ঞানপ্রকাশবাবুকে।"তাই নাকি ? কবিতাগুলো আমাকে একটু পাঠিয়ে দিও",
জ্ঞানপ্রকাশবাবুর প্রতিক্রিয়া ছিল। মিলটুবাবু পাঠিয়েও ছিলেন, সেই আগের জমা দেওয়া ২৫টা গান, অপরিবর্তিত। কিছুদিন পরেই চিঠি পেলেন মিলটুবাবু, এখন থেকে উনি আকাশবাণী, কলকাতার
তালিকা-ভুক্ত গীতিকার হলেন।
এক প্রযোজক মিলটুবাবুকে বললেন একটা নতুন ফিল্মের গানের ব্যাপারে ওনার সাথে বোম্বে যেতে হবে, এক নামকরা সংগীত পরিচালকের সাথে কথা বলতে। কথামত প্রযোজকের সাথে উড়ে গেলেন বোম্বে, পরের দিন সকালে সেই সংগীত পরিচালকের সাথে মিটিং। "খুব ব্যস্ত উনি, ঠিক সময়ে তৈরী থাকবেন কাল, দেরী যেন না হয়", প্রযোজক রাত্রে মিলটুবাবুকে সচেতন করে দিলেন। সকালে তৈরী উনি, রোজকারের পোশাকের মতোই পাজামা-পাঞ্জাবী পরে। সংগীত পরিচালকের বাড়ীতে গিয়ে বসার ঘরে চুপচাপ অপেক্ষা করছেন দুজনে। একটু পরেই ঢুকলেন পরিচালক, মিলটুবাবুকে দেখেই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে জিজ্ঞাসা করলেন,"কেমন আছেন কাকু"? প্রযোজক স্বাভাবিক ভাবেই খুব অপ্রস্তুত, ধাক্কাটা সামলে নিয়ে শুরু করলেন গানের ব্যাপারে আলোচনা। মিলটু ঘোষ যে গীতিকার এই ভূমিকাটা বাপ্পী লাহিড়ীকে দেবার কোনো অবকাশ রইলো না।
মিলটুবাবু কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, "কাজল কাজল কুমকুম" (১৯৫৬) আপনার এক অনবদ্য গীতি, এটা লেখার প্রেরণা কি ছিল ? উত্তরে বলেছিলেন, শরত কালের এক ঝলমলে সকালের ওপর লিখেছিলাম ওই কবিতা। যদিও নিজের লেখা গানের মধ্যে ওনার সব চাইতে প্রিয় হলো পিনটু ভট্টাচার্যর "এক তাজমহল গোড়ো হৃদয়ে তোমার ", গীতা দত্তর "কাজল কাজল কুমকুম " গায়িকা, গীতিকার এবং সুরকার সুধীন দাসগুপ্ত , সবাইকেই স্মরনীয় রাখবে।
মিলটুবাবু কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, "কাজল কাজল কুমকুম" (১৯৫৬) আপনার এক অনবদ্য গীতি, এটা লেখার প্রেরণা কি ছিল ? উত্তরে বলেছিলেন, শরত কালের এক ঝলমলে সকালের ওপর লিখেছিলাম ওই কবিতা। যদিও নিজের লেখা গানের মধ্যে ওনার সব চাইতে প্রিয় হলো পিনটু ভট্টাচার্যর "এক তাজমহল গোড়ো হৃদয়ে তোমার ", গীতা দত্তর "কাজল কাজল কুমকুম " গায়িকা, গীতিকার এবং সুরকার সুধীন দাসগুপ্ত , সবাইকেই স্মরনীয় রাখবে।
(মিল্টু'দার কাছ থেকে শোনা গল্প)
Ojana kotha jante parlam
ReplyDeleteআমার শ্রদ্ধেয় মামা মিল্টু ঘোষ কে আমি খুব ভালোবাসি তাই উনি আমার হৃদয়ে আছেন। 🙏
ReplyDelete